এম.পি.সার্কেল, নাগরিক প্রতিক্রিয়া ডেক্স:
বাঙালির প্রাণের উৎসব নববর্ষ। গ্রামীণ মেলা, লোকজ উৎসব, হালখাতা আর রমনার বটমূলের উৎসব এখন আপামর বাঙালির হৃদয়ের উৎসবে পরিণত হয়েছে। বাঙালির সংস্কৃতি, কৃষ্টি, ইতিহাস, ঐতিহ্যের ধারক-বাহক এই নববর্ষ। বাঙালির ভাষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি একদিনে তৈরি হয়নি। হাজার বছরের ইতিহাস-ঐতিহ্য মিলেমিশে তৈরি হয়েছে। ধর্মীয় আবরণের বাইরে গিয়ে রূপ পেয়েছে সর্বজনীন।
বাঙালির সবচেয়ে বড় অসাম্প্রদায়িক উৎসব বাংলা নববর্ষ এক অর্থে বর্তমানে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নামে যা চলছে, তা আমাদের ব্যথিত করছে, ক্ষুব্ধ করছে। বিজ্ঞান প্রমাণনির্ভর আর ধর্ম বিশ্বাসনির্ভর, এই কথা বলার জন্য বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলকে ধর্মানুভূতিতে আঘাতের নামে জেলে যেতে হয়েছে কিংবা ড. লতা সমাদ্দারকে টিপ পরার কারণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতেই হয়রানির শিকার হতে হয়েছে যা আমাদের জন্য উদ্বেগের।
শিক্ষক আমোদিনী পালের ঘটনাটিও আমাদের বিস্মিত করেছে। এসব কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। সুস্থ সাংস্কৃতিক চর্চার বিমুখতা, ইতিহাস চর্চার অভাব, বিজ্ঞান শিক্ষার অভাবের কারণে এসব হয়রানি বাড়ছে। যা আমাদের ভাবিত করে তুলেছে।
বাঙালিকে রুখে দাঁড়াতে হবে। অপশক্তির বিরুদ্ধে শুভশক্তির লড়াই অব্যাহত রাখতে হবে। অতীতে যেভাবে বড় বড় ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সুস্থ সাংস্কৃতিক লড়াইয়ের মাধ্যমে প্রতিহত করা হয়েছে, বর্তমানেও সেভাবে প্রতিহত করতে হবে। মানুষকে প্রতিবাদী হতে হবে। ঘটনার পেছনে লুকায়িত মুখোশগুলো খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনা প্রয়োজন।
বাঙালিকে রুখে দাঁড়াতে হবে ধর্মান্ধদের বিরুদ্ধে, অপশক্তির বিরুদ্ধে, অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে। এক্ষেত্রে বাঙালি সংস্কৃতিই আমাদের পথ দেখাবে।
রামেন্দু মজুমদার, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব