এমপি সার্কেল, সুনাগরিক চক্র ডেক্স:
আওয়ামী লীগের সাধারণ সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের পা ছুঁয়ে সালাম করেছেন নোয়াখালী-৪ (সদর-সুবর্ণচর) আসনের নৌকার মনোনয়ন পাওয়া বর্তমান সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী। এসময় ওবায়দুল কাদের তাকে বুকে টেনে নেন। সেই ছবি ইতিমধ্যে সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
সোমবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে ধানমন্ডির দলীয় কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে বলে নিশ্চিত করেছেন একরামুল করিম চৌধুরী নিজেই।
রাহি হুদা নামের এক ফেসবুক ব্যবহারকারী তার মন্তব্য লিখেন, আজ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ভাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন একরামুল করিম চৌধুরী। এটি সম্পর্কের মধুর বন্ধন। তাদের এ বন্ধন অটুট থাকুক। জিতবে আবার নৌকা।
ঘটনার সময়ে উপস্থিত থাকা নোয়াখালী সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম শামছুদ্দিন জেহান বলেন, ওবায়দুল কাদের সাহেবের সঙ্গে দেখা করার সময় অন্যরকম ঘটনার অবতারণা ঘটে। একরামুল করিম চৌধুরী প্রথমে ওবায়দুল কাদের মহোদয়ের পা ছুঁয়ে সালাম করেন। তারপর একরাম চৌধুরীকে বুকে টেনে নেন ওবায়দুল কাদের। এরপর বিভিন্ন পরামর্শ দেন। শেষে আমিসহ একটি নৌকা উপহার দেই সেতুমন্ত্রী মহোদয়কে। তিনি খুশি হয়ে তা গ্রহণ করেন।
এ বিষয়ে একরামুল করিম চৌধুরী বলেন, কাদের ভাই আমাদের গর্ব। তিনি নোয়াখালীর রত্ন। আমি ওনাকে শ্রদ্ধা করি। অতীতে কি হয়েছে সেটা বাদ। আমি ওনার সঙ্গে দেখা করেছি। পা ছুঁয়ে সালাম করেছি। তিনি আমাকে বুকে টেনে নিয়েছেন। অনেক পরামর্শ দিয়েছেন। আমি ওনার পরামর্শগুলো কাজে লাগাবো। নৌকার জয় হবে ইনশাআল্লাহ।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার প্রতি আমার আস্থা ছিল। আমি নৌকা পেয়েছি। প্রধানমন্ত্রী আমাকে যে বিশ্বাস করেছেন আমি তার মূল্য দিতে চাই। আমরা সবাই এক হয়ে নোয়াখালী-৪ এর মানুষ বঙ্গবন্ধুকন্যাকে নৌকা জয়যুক্ত করে দেশের উন্নয়নের অংশীদার হবো। সেই লক্ষ্যে কাদের ভাই আমাকে কাজ করতে বলেছেন। জিতে আসতেই হবে, এছাড়া উপায় নেই বলেও তিনি আমাকে বলেছেন।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচনের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণাকালে নোয়াখালীর অপরাজনীতি, নিয়োগ বাণিজ্য, টেন্ডারবাজিসহ নানা অনিয়মের প্রসঙ্গ তোলেন ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জা। ওই সব অভিযোগের তীর ছিল সংসদ সদস্য একরামুল করিমের দিকে। কাদের মির্জার ধারাবাহিক বক্তব্য ও নানা অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২০২১ সালের ২১ জানুয়ারি ফেসবুক লাইভে আসেন একরামুল করিম চৌধুরী। তখন তিনি বলেন, ‘আমি কথা বললে তো আর মির্জা কাদেরের বিরুদ্ধে কথা বলব না। আমি কথা বলব ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে। একটা রাজাকার পরিবারের লোক এই পর্যায়ে এসেছে, তার ভাইকে শাসন করতে পারে না। এগুলো নিয়ে আমি আগামী কয়েক দিনের মধ্যে কথা বলব। আমার যদি জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি না আসে। তাহলে আমি এটা নিয়ে শুরু করব।’
এরপর জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি থেকে একরামুল করিম চৌধুরীকে বাদ দিয়ে গঠন করা হয় আহ্বায়ক কমিটি। এরপর গত ৫ ডিসেম্বর নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে অধ্যক্ষ এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরীকে সভাপতি হিসেবে ঘোষণা করেন সম্মেলনের প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। পরে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সহিদ উল্যাহ খান সোহেলকে নির্বাচিত করা হয় এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে একরামুল করিম চৌধুরীকে মনোনীত করা হয়।