এমপি সার্কেল, শিক্ষাঙ্গন-শিক্ষার্থী ও কর্মসংস্থান ডেক্স:
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বিরুদ্ধে মোট ১৩ অডিট আপত্তি দিয়েছে শিক্ষা অডিট অধিদপ্তর। যার অধিকাংশই সাধারণ আপত্তি ৭টি, আর অগ্রিম আপত্তি ৬টি।
অগ্রিম আপত্তির ৬টিতে ৯ কোটি ১৬ লাখ ২৫ হাজার এবং সাধারণ আপত্তির ৭টি জড়িত টাকার পরিমাণ ০৪ কোটি ০৮ লাখ ৯১ হাজার। মোট ১৩ টি আপত্তির বিপরীতে ১৩ কোটি ২৫ লাখ ১৬ হাজার টাকার অনিয়ম দেখানো হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন -২০২২ থেকে এই তথ্য পাওয়া যায়।
জানা যায়, ইউজিসির সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে ২০২২ সালের তথ্যের ভিত্তিতে। ওই সময় দেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ছিল ৫৩টি। এর মধ্যে ৪২টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন অর্থবছরে মোট ১ হাজার ২৭৬ কোটি ২৫ লাখ ২২ হাজার টাকার অনিয়ম হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
প্রতিবেদনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সবচেয়ে বেশি আর্থিক অনিয়মের তথ্য পেয়েছে শিক্ষা অডিট অধিদপ্তর। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিদ্যালয়, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। এ পাঁচ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনিয়ম হয়েছে প্রায় ৬৫০ কোটি টাকার।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ১লা জানুয়ারি ২০২২ থেকে ৩১শে ডিসেম্বর ২০২২ পর্যন্ত বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের অর্থ ও হিসাব বিভাগের অডিট শাখা কর্তৃক বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাপ্ত বিএসআর-এর ওপর লিখিত মন্তব্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়, শিক্ষা অডিট অধিদপ্তর এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রেরণের বিবরণী থেকে এই তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। উল্লেখ্য, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের যে অডিট আপত্তি দেখানো হয়েছে সেটি ২০২০-২০২১ সালের তথ্যের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে।
অডিট আপত্তির বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ পরিচালক ড. মো. মহসিন রেজা বলেন, আমি নতুন দায়িত্বে এসেছি। ২০২০- ২০২১ সালের উপর ভিত্তি করে এই রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। অডিট আপত্তির বিষয় সম্পর্কে আমরা জানার চেষ্টা করছি। ইউজিসি যেসব আপত্তি জানিয়েছে সেসসব বিষয় গুলো নিয়ে আমরা কাজ করবো।
আর্থিক অনিয়মের বিষয়ে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. হুমায়ুন কবির চৌধুরী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য যেসব বাজেট দেওয়া হয় সেগুলো ব্যয় করার জন্য নির্ধারিত খাত থাকে। এখন আমরা আমাদের বাজেট অংশ নির্ধারিত খাতের বিপরীতে ব্যবহার করি অন্য কাজ সমাধানের জন্য। ইউজিসি বলে, যে খাতে যত টাকা দেওয়া হয় সেটুকু অংশ ব্যবহার করতে। এখন এর বিপরীতে অন্য খাতে ব্যবহার করলে ইউজিসি আপত্তি জানায়। এখানে যে অন্যায় হয়েছে বিষয়টি এমনও না। এরকম সমন্বয় করতে গিয়ে ইউজিসি বিষয়টি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সচ্ছতা নির্ধারণের জন্য অডিট আপত্তি প্রয়োজন রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব গুলো সঠিকভাবে ব্যয় নির্বাহ করার জন্য এসব অডিট গুলো হয়। আমাদের এখানে দুইটি বিষয় রয়েছে রাজস্ব খাতে ব্যবহার করার জন্য যে টাকা আসে সে খাত কিছু অংশ আমরা আন্তখাতে সমন্বয় করে থাকি। এখন এই সমন্বয় গুলো করতে গিয়ে ইউজিসি অডিট আপত্তি জানায়। আমাদের এখানে অধিকাংশ কর্মচারী ডেইলি বেসিসে কাজ করে, এখন এসব জনবলের জন্য বাজেটের কোন অংশ রাখা যায় না এবং এই কর্মচারী গুলো ইউজিসির অধিভুক্ত হয়নি। এদেরকে বেতন দিয়ে রাখতে হয়। ইউজিসি কোন কোন খাতে আপত্তি জানিয়েছে সেটি আমি জানার চেষ্টা করছি। এর বাহিরে কোন আর্থিক অনিয়ম হলে আমি খতিয়ে দেখব।