এমপি সার্কেল, সংসদ-মন্ত্রীসভা ও সুশাসন ডেক্স:
চলতি সংসদ অধিবেশনে বিচারপতি নিয়োগের জন্য আইন আনা হবে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ ও জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর করা এক প্রশ্নের উত্তরে এ কথা জানান আইনমন্ত্রী। অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।
আইনমন্ত্রী বলে, ‘বিচারপতি নিয়োগের জন্য সংবিধানে একটি আইন করার কথা বলা আছে। চলতি সংসদে বিচারপতি নিয়োগের জন্য আইন আনা হবে।’
তিনি বলেন, ‘আপিল বিভাগে সাতজন বিচারপতি থাকতে হবে, সংবিধানে এমন কোনো বিধান নেই। আগে ১১জন বিচারপতিও ছিলেন। খুব শিগগির আপিল বিভাগে বিচারপতি নেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপতি উদ্যোগ নেবেন। একইভাবে হাইকোর্ট বিভাগে বিচারপতি বাড়ানোর বিষয়েও রাষ্ট্রপতি উদ্যোগ নেবেন।’
সরকারদলীয় সংসদ সদস্য এম. আবদুল লতিফের করা প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, দেশের মামলাজট কমানোর লক্ষ্যে বিচারকের সংখ্যা বাড়ানো এবং নতুন আদালত প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সম্প্রতি সহায়ক জনবলসহ ৪৭টি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, সাতটি সাইবার ট্রাইব্যুনাল, সাতটি মানবপাচার ট্রাইব্যুনাল, সাতটি সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল, গাজীপুর ও রংপুর চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, দুটি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, ৩০টি সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ও ২২টি জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, ৬২টি অতিরিক্ত জেলা জজ আদালত ও ১১টি অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত, পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় একটি সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ও একটি সিনিয়র সহকারী জজ আদালত, গাজীপুর, রংপুর ও বরিশালে তিনটি মহানগর দায়রা জজ আদালত, তিনটি অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত ও তিনটি যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ আদালত সৃজন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ১১টি যুগ্ম জেলা জজ, ৩৪টি যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ ১৭টি অর্থঋণ আদালত, ২১৪টি সহকারী জজ আদালত, ১৩টি ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল, ৫৪টি ল্যান্ড সার্ভে আপিল ট্রাইব্যুনাল, চট্টগ্রাম জেলায় তিনটি অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, ১০টি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, সাতটি অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এবং মাদক সংক্রান্ত মামলা বিচারের জন্য স্বতন্ত্র ৩০টি অতিরিক্ত জেলা জজ, ২৪টি অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ, ৬৬টি যুগ্ম জেলা জজ ও ৩২টি যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ আদালত সৃজনের প্রস্তাব প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
আনিসুল হক বলেন, বিচার কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনের জন্য বিচারকের নতুন পদ সৃজনে বর্তমান সরকার কার্যকর উদ্যোগ নিয়েছে। সরকারের আন্তরিক উদ্যোগের কারণেই অধস্তন আদালতে বিভিন্ন পদমর্যাদার ৩৫৯টি বিচারকের পদ সৃজন করা হয়েছে। আদালতগুলো যাতে সুষ্ঠুভাবে কাজ করতে পারে সেজন্য ১৯৯৯টি সহায়ক পদ সৃজন করা হয়েছে। অপরদিকে, ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে চারদলীয় বিএনপি-জামায়াত জোট আমলে মাত্র ২৫টি বিচারকের পদ এবং ১৩৩টি সহায়ক জনবলের পদ সৃজন করা হয়।
তিনি বলেন, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত অধস্তন আদালতে মোট ১ হাজার ৪২৬ জন বিচারক (সহকারী জজ) নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পক্ষান্তরে ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত চারদলীয় বিএনপি-জামায়াত জোট আমলে অধস্তন আদালতে মাত্র ১৯০ জন বিচারক নিয়োগ করা হয়েছিল। এ ছাড়া ১০৪ জন বিচারক নিয়েগের জন্য বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশন সুপারিশ প্রদান করছে। আরও ১০০ জন বিচারক নিয়োগ পরীক্ষার প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশন বরাবর পত্র পাঠানো হয়েছে। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়টি সরকারের বিবেচনায় রয়েছে।