এমপি সার্কেল, আলোচিত সংবাদ ডেক্স:
জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন এবং সেখানে তাদের মর্যাদাপূর্ণ জীবন নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, পুরো বিশ্বের উচিত এই সংকটের সমাধান খুঁজে বের করা, যাতে মিয়ানমারের নাগরিকরা তাদের মাতৃভূমিতে ফিরে যেতে পারে এবং সুন্দরভাবে জীবনযাপন করতে পারে।
রোববার (২৮ জানুয়ারি) বীরেন্দ্র শর্মার নেতৃত্বে ব্রিটিশ ক্রস পার্টির একটি সংসদীয় প্রতিনিধি দল গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এসব কথা বলেন।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচরাইটার এম নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৭ সালে অমানবিক নির্যাতনের মুখে রোহিঙ্গাদের ব্যাপকভাবে দেশত্যাগের পর তারা তাদের আশ্রয় দিয়েছিলেন। মিয়ানমার তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে সম্মত হয়েছে, কিন্তু ছয় বছর অতিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও এখনও এই লক্ষ্যে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি, তিনি বলেন।
কোভিড-১৯ মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে বৈশ্বিক আর্থিক সহায়তা কমে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা এখন বাংলাদেশের মতো একটি ছোট দেশের জন্য বিশাল বোঝা হয়ে উঠছে।
২০১৭ সালে মিয়ানমারে নৃশংস দমন-পীড়ন থেকে বাঁচতে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে আসা ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ।
শেখ হাসিনা বলেন, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের মধ্যে প্রায় ৪০ হাজার গর্ভবতী নারী ছিল। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সরকার ও জনগণ প্রাথমিকভাবে তাদের খাদ্য ও আশ্রয় দিয়েছে।
ছয় বছর অতিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও, মিয়ানমার তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য বাস্তবসম্মত কিছুই করেনি। ফলে মিয়ানমারের নাগরিকরা বাংলাদেশের ক্যাম্পে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা এখন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে। যার কারণে মাঝে মধ্যে রক্তপাতের মতো ঘটনা ঘটছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভাসানচর দ্বীপে রোহিঙ্গাদের জন্য আমরা উন্নত আবাসনের ব্যবস্থা করেছি। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে কিছু রোহিঙ্গাকে ভাসানচর পুনর্বাসন করা হয়েছে। আমরা তাদের জন্য খাবার, চিকিৎসা সুবিধা, শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছি। তারা সেখানে অনেক ভালো আছে।
নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের উদার আতিথেয়তা এবং রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে তাদের সমর্থন পুনর্নিশ্চিত করতে ৩০ জানুয়ারি প্রতিনিধি দলটি কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবে।
২৭ জানুয়ারি ঢাকায় আসা প্রতিনিধিদলের ৩১ জানুয়ারি লন্ডনের উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা রয়েছে।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, অ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ এম জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (পিএমও) সচিব এম সালাউদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।