এমপি সার্কেল, সুচিকিৎসা চক্র:
এই মুহুর্তে পুরো দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে সবার সতর্ক থাকার পাশাপাশি কিছু জরুরি তথ্য জেনে রাখা জরুরি।
১. ডেঙ্গু রোগী যেন মশারির ভেতর থাকে সেটা নিশ্চিত করতে হবে। পুরো হাতার জামা, জুতা-মোজা পরে কর্মস্থলে আসতে হবে। প্রয়োজনে মসকিউটো রিপিলেন্ট বা মশা প্রতিরোধক ক্রিম ব্যবহার করতে হবে।
২. যে কোনো জ্বরের রোগীরই এখন রক্ত পরীক্ষা করা দরকার। প্রথম তিন-চার দিনের মধ্যে হলে এনএসওয়ান অ্যান্টিজেন, পাঁচ দিনের পরে হলে অ্যান্টি ডেঙ্গু অ্যান্টিবডি আইজিএম ও আইজিজি পরীক্ষা করুন।
৩. ছয় মাসের ওপরের বয়সের সবাইকে পূর্ণমাত্রার নরমাল স্যালাইন দিতে হবে। তার নিচে হলে অর্ধমাত্রার স্যালাইন অর্থাৎ ০.৪৫% স্যালাইন দিতে হবে। বেবি স্যালাইন দেওয়া যাবে না।
৪. ফুসফুসে বা পেটে পানি প্লাজমা লিকেজের জন্য আসতে পারে। তবে বেশি হলে অবশ্যই রক্তে অ্যালবুমিনের মাত্রা দেখতে হবে। প্রয়োজনে শিরায় অ্যালবুমিন দিতে হবে।
৫. রোগী শকে না থাকলে স্বল্পমাত্রায় (১.৫ মিলি/কে জি/ঘণ্টা) নরমাল স্যালাইন দিয়ে চিকিৎসা শুরু করতে হবে।
৬. প্লাটিলেট কমে গেলেই যে প্লাটিলেট দিতে হবে তা নয়। রক্তক্ষরণ বা শরীরে লাল গোটা, দাঁতের মাড়ি থেকে রক্তক্ষরণ হলেও নয়। তবে অতি মাত্রায় প্লাটিলেট কমে গেলে (৫-১০,০০০) ও রক্তক্ষরণ হতে থাকলে প্লাটিলেট দেওয়ার কথা বিবেচনা করা যেতে পারে। সম্ভব হলে সিঙ্গেল ডোনার প্লাটিলেট দিতে হবে।
৭. তরল কমাতে না বাড়াতে হবে রক্তের হিমাটোক্রিট দেখে, প্লাটিলেট দেখে নয়।
৮. শকের রোগীর সাধারণত ২৪ ঘণ্টার বেশি আইভি ফ্লুইড বলা শিরাপথে স্যালাইন লাগে না। রোগ জটিলতর হলে সর্বোচ্চ ৭২ ঘণ্টা স্যালাইন দরকার হতে পারে।
৯. উপসর্গ দেখা দেওয়ার চার-পাঁচ দিন পর জ্বর নেমে যাওয়ার সময়ই বিপদের আশঙ্কা দেখা দেয়। রোগীর এ সময় জ্বর কমলেও শকের কারণে রক্তচাপ হঠাৎ নেমে আসে। এ সময় রোগীকে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকতে হবে।
১০. বুকে ব্যথা হলে হৃৎপিণ্ডের মাংসপেশি আক্রান্ত হলো কিনা, তা পরীক্ষা করে দেখতে হবে। সে ক্ষেত্রে ইসিজি, ইকো, ট্রপোনিন আই ও সিকে এমবি পরীক্ষা করতে হবে।
১১. স্টেরয়েড কখনোই দেওয়া যাবে না। যদি ডেঙ্গুর জটিলতার কারণে হৃৎপিণ্ডের মাংসপেশি আক্রান্ত বা হৃৎপিণ্ডের পর্দায় পানি জমা হয় তাহলে এ ধরনের জটিল সমস্যায় স্টেরয়েড ব্যবহার করা যেতে পারে।