এমপি সার্কেল, সংবাদ সংযোগ ডেক্সঃ
বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী ‘গ্রুপ অব টোয়েন্টি’ বা জি-২০ সম্মেলনে অংশ নেবেন না রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। আগামী সপ্তাহে ইন্দোনেশিয়ার বালিতে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
অবশ্য প্রেসিডেন্ট পুতিন অংশ না নিলেও আসন্ন এই সম্মেলনে রুশ প্রতিনিধি দল অংশ নেবে। বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
টানা সাড়ে আট মাস ধরে ইউক্রেনে আগ্রাসন চালাচ্ছে রাশিয়া। দীর্ঘ এই সময় ধরে উভয় দেশের হামলা-পাল্টা হামলা এবং মস্কোর বিরুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলোর একের পর এক নিষেধাজ্ঞাও রাশিয়াকে তার অবস্থান থেকে সরিয়ে আনতে পারেনি।
এই পরিস্থিতিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গ্রুপ অব টোয়েন্টি বা জি-২০ নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনে আসবেন না বলে দিন দু’য়েক আগে জোরালো আশাবাদ ব্যক্ত করেন আয়োজক দেশ ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো।
যদিও যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের বিরোধিতা সত্ত্বেও এই সম্মেলনে পুতিনের সশরীরে যোগ দেওয়ার পরিকল্পনার কথা আগেই জানানো হয়েছিল। তবে পুতিনের উপস্থিতি বিশ্বনেতাদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি করতে পারে এমন আশঙ্কায় পুতিন জি-২০ সম্মেলনে অংশ নেওয়া এড়িয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
আল জাজিরা বলছে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আগামী সপ্তাহে ইন্দোনেশিয়ার বালিতে অনুষ্ঠিতব্য জি-২০ সম্মেলনে যোগ দেবেন না। আর তাই পুতিনের পরিবর্তে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ এই শীর্ষ সম্মেলনে রাশিয়ান প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন।
ইন্দোনেশিয়ায় অবস্থিত রাশিয়ার দূতাবাস বার্তাসংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে, আসন্ন শীর্ষ সম্মেলনকে সামনে রেখে প্রেসিডেন্ট পুতিনের কর্মসূচি নিয়ে ‘এখনও কাজ করা হচ্ছে’ এবং রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভার্চ্যুয়ালি এই সম্মেলনে অংশ নিতে পারেন।
ইন্দোনেশিয়ার একজন সরকারি কর্মকর্তা এর আগে বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেছিলেন, আসন্ন সম্মেলনে সের্গেই ল্যাভরভ প্রেসিডেন্ট পুতিনের প্রতিনিধিত্ব করবেন এবং রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট কেবল সম্মেলনের একটি বৈঠকে ভার্চ্যুয়ালি যোগ দেবেন।
এর আগে পুতিন আগামী সপ্তাহে অনুষ্ঠিতব্য জি-২০ নেতাদের শীর্ষ সম্মেলন মিস করতে পারেন বলে ইন্দোনেশিয়ান প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো গত সোমবার গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন। সেসময় তিনি বলেন, গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট পুতিনের সাথে হওয়া কথোপকথন তিনি যে ‘দৃঢ় ইঙ্গিত’ পেয়েছেন তা হলো- রুশ এই নেতা বালিতে অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলনে যোগ দেবেন না।
মূলত ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের কারণে সম্মেলনে পুতিনের উপস্থিতি উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে অনেকের।
আল জাজিরা বলছে, গ্রুপ অব টোয়েন্টি বা জি-২০ সম্মেলনের আযোজক দেশ হিসাবে রাশিয়াকে বিচ্ছিন্ন করার এবং গ্রুপ থেকে বহিষ্কার করার জন্য পশ্চিমা বিভিন্ন দেশসহ ইউক্রেনের চাপ রয়েছে ইন্দোনেশিয়ার ওপর। তবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটি বরাবরই বলে আসছে, গ্রুপের সকল সদস্য দেশের ঐকমত্য ছাড়া এটি করার ক্ষমতা তাদের নেই।
এছাড়া জি-২০ নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকেও আমন্ত্রণ জানিয়েছে ইন্দোনেশিয়া। তবে ইউক্রেনীয় এই প্রেসিডেন্ট আগেই বলেছেন, পুতিন সম্মেলনে আসলে তিনি সেখানে অংশ নেবেন না।